পতিতা পর্ব-৮ | Potita -8 লেখিকাঃ ইতি চৌধুরী

কত আপন মানুষ। যেনো মানুষটা আমার আত্মার সাথে জড়িয়ে আছে। ঘুম থেকে উঠেই ছাদে পায়চারি করতে লাগলাম। তাকে তো বলে দিলাম আমি টুনিকে নিয়ে কালই যাবো কিন্তু মাকে কি বলবো??? টুনিকে নিয়ে যাওয়া মানে কম হলেও একদিনের ব্যাপার। রাত হলে কিছু বলা লাগতো না। কিন্তু দিনের কথা কি বলবো???

পরে গেলাম মহা চিন্তায়৷ আমি যখন খুব বেশি চিন্তায় থাকি তখন এভাবে পায়চারি করি এটা বাসার সবাই জানে। তাই ভয়ও লাগছে কেউ দেখে ফেললও বুঝে যাবে আমি কিছু একটা নিয়ে চিন্তা করছি।

অনু- আপু

হঠ্যাৎ করে অনুর ডাকেও চমকে উঠলাম আমি। কথায় আছে না চোরের মন পুলিশ পুলিশ৷ আমার এখন হয়েছে সেই অবস্থা।

রেনু- হ্যাঁ অনু তুই।

অনু- আপু তুমি কি কিছু নিয়ে খুব চিন্তিত??

রেনু- না কই না তো।

অনু- না বললেই তো হলো না। তোমাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে কিছু একটা তো হয়েছে।

রেনু- আরে না কিছু না।

অনু- না হলেই ভালো। আচ্ছা যে জন্য এসেছিলাম তোমার ফোন বাজছিলো উঠিয়ে দেখি তমা আপু কিন্তু রিসিভ করার আগেই কলটা কেটে গেলো।

অনু আমাকে ফোনটা দিয়ে চলে গেলো। আমার মুখে রাজ্যের হাসি ফুটে উঠল। তমা আমার বেষ্টফ্রেন্ড। আমার ছোট বেলার সাথী৷ আমার সব বিপদের সঙ্গী। আমার সব ভালো-মন্দের পরামর্শ দাতা। ঠিক আমি বিপদে আছি তাই ও বুঝে গেছে। ওর কথা ভাবতে ভাবতেই আবার ফোনটা বেঝে উঠল।

রেন- হ্যাল….

তমা- তোর হ্যালো ট্যালো রাখ তো আগে সত্যি করে বলতো তুই কেমন আছিস??

রেনু- আমি?? কেন আমি তো ভালো আছি।

তমা- তোর এই হেয়ালি পনার উত্তর চাই নি৷ সত্যি টা বল।

রেনু- আরে বাবা সত্যি বলছি। আমি ভালে আছি।

তমা- সত্যি তো??

রেনু- সত্যি সত্যি সত্যি এবার হলো?

তমা- না হলো না তাও মেনে নিলাম।

রেনু- কেমন আছিস তুই??

তমা- ভাল না একদম ভালো না।

রেনু- কেনো কি হয়েছে???

তমা- পরপর দু দিন তোকে নিয়ে বাজে স্বপ্ন দেখলাম এর পর কিভাবে ভালো থাকি বল।

আমি ওর কথা শুনে হেসে দিলাম।

তমা- দেখ তুই একদম হাসবি না তের হাসি দেখলে আমার গা ঝালা করে।

আমি আরো জোরে হেসে দিলাম। এবার তমাও আমার হাসি শুনে হেসে দিলো। দুজন অনেকদিন পর মন খুলে হাসলাম।

তমা- ছোট বাবা কেমন আছে রে???

রেনু- বাবা এখন অনেকটাই ভালো আছে।

তমা- উঠতে পারে???

আমি একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাড়লাম।

রেনু- নারে।

তমা- ডাক্তাররা কি বলে।

রেনু- নতুন কিছু বলে নি আর।

তমার বাবা ছোট বেলায় মারা যায়। সেই ক্লাস ওয়ান থেকে আমরা একসাথে পরি। ওর বাবা আর আমার বাবা বন্ধু ছিলেন। তমা ছোট বেলা থেকেই আমার বাবাকে ছোট বাবা বলে ডাকতো। এক বছর আগেই ওর বিয়ে হয়ে যায়। তমার বরটাও অনেক ভালো। সিলেটে থাকে ওরা৷

তমা- তুই কি আমাকে কিছু বলবি??

রেনু- তুই কিভাবে বুঝলি???

তমা- এতো বুঝা বুঝি রেখে কি বলবি সেটা বল।

রেনু- না মানে একটা হেল্প লাগবে।

তমা- কি হয়েছে বল। টাকা পয়সা লাগবে???

রেনু- না তা না।

তমা- তাহলে???

আমি তমাকে টুনির কথা বললাম। টুনির মায়ের কথাও বললাম। সব কিছুই ভালো ভাবে বললাম ওকে।

তমা- সেটা তো বুঝালাম এখন কি করতে চাস তুই??

রেনু- আমি টুনিকে টুনির মায়ের কাছে নিয়ে যাবো।

তমা- সেটা তো ভালো কথা। নিয়ে যা সমস্যা কোথায়??

রেনু- সমস্যা হলো বাসায় কি বলবো??? মাকে বললে মা এতো দূর যাওয়ার অনুমতি দিবে না তা আমি জানি।

তমা- তাহলে কি বলতে চাস???

রেনু- সেটাই তো বুঝতে পারছি না কি বলবো।

তমা কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলল।

তমা- বল আমার কাছে আসবি। আর আমি তমালকেও বলে দিবো ও কাউকে বলবে না এটা আমাদের তিনজনের মাঝেই থাকবে।

রেনু- সত্যি তোর কথা বলবো.??

তমা- হ্যা আমার কথা বল। আমার কথা বললে তোকে অনুমতিও দিবে।

রেনু- তা দিবে জানি।

তমা- তাহলে এতো না ভেবে বলে ফেল।

রেনু- ঠিক আছে।

তমা- আমি জানি তুই কখনো ভুল কোন সিদ্ধান্ত নিবি না এই টুকু বিশ্বাস তোর উপর আমার আছে। আর এটা তো অনেক ভালো একটা কাজ। মেয়েকে মায়ের বুকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবি।

রেনু- আমি জানতাম আর কেউ না বুঝলেও তুই ঠিকি বুঝবি।

তমা- আর তুই এটা নিয়েই চিন্তায় ছিলি তাই না???

রেনু- হ্যাঁ, আর তুই সেটাও বুঝে গেলি।

তমা- না বুঝে কি উপায় আছে বল। তোর সাথে তো আমার আত্মার সম্পর্ক। আমার কিছু হলে যেমন তুই টের পেয়ে যাস সেভাবেই তোর কিছু হলে আমিও বুঝে যাই। তবে একটা কথা।

রেনু- কি কথা বল।

তমা- টুনির সাথে তোর পরিচয় কিভাবে হলো।

মনে মনে এই ভয়টাই পাচ্ছিলাম আমি। তমা যদি জানতে চায় আমি টুনি কে কিভাবে চিনি তাহলে কি বলবো। আর মিথ্যাও তো বলতে পারব না। মিথ্যা বললেই তমা ধরে ফেলবে। ও আমাকে খুব ভালো করেই চিনে।

তমা- কিরে বল।

রেনু- কাজের মাধ্যমে।

তমা- তোর কলিগ???

রেনু- কলিগ না ঠিক।

তমা- তাহলে???

রেনু- আমার বসের হাউজ এসিস্ট্যান্ট। আমার বসই সেরাতে টুনিকে বাঁচায়৷ ওকে আশ্রয় দেয়। ওর লালন পালন করে। এমনকি মেয়েটাকে খুব যত্নে আদরেই রেখেছে।

তমা- দেখছিস এমন ভালো মানুষ আছে বলেই পৃথিবীটা এখনো আছে। সে নিঃসন্দেহে অনেক ভালো একজন মানুষ। প্রতিটা মানুষ যদি তার মতো হতো পৃথিবীটা আরো সুন্দর হতো। নাহলে যে টুনি টা সেরাতে এই আলোকিত দুনিয়ার অন্ধকার রূপটার সাথে পরিচিত হয়ে যেতো। অন্ধকার জগৎতে একজন টুনির সংখ্যা বেরে যেতো।

রেনু- হ্যা রে।

মনে মনে তমার মুখে ঐ মানুষটার প্রসংশা শুনে ভালোই লাগছে। শুধু তো টুনি কে নয় আমাকেও বাঁচিয়েছে মানুষটা। আমার জীবনের অন্ধকার দিকটা তো কেবল তাকে ঘিরে। সে তো আমাকে অন্য কোন অন্ধকারে আচ্ছন্ন হতে দেয় নি। আর তমাকেও মিথ্যা বলতে হলো না। তার সাথে তো আমার কাজের সম্পর্কই। হয়ত শুধু ডিটেইলস টা ভিন্ন। থাক না কিছু কথা সবার কাছে অজানা হয়ে৷ সবাই না হয় অন্ধকারের আলোকিত দিকটা দেখলো আর আমি অন্ধকার দিকটা দেখলাম।

সেই থেকে বাবার পাশে বসে আছি। প্রতিদিনের তুলনায় আজ কথা একটু কম বলছি।

বাবা- রেনু মা।

রেনু- জ্বি বাবা বলো।

বাবা- তুই কি কিছু বলবি??

রেনু- কেনো বাবা??? না মানে…

বাবা- এতো সংকোচ কেন মা বল না কি বলবি।

তনুও আমাদের সাথে ছিলো।

রেনু- তনু যা তো মাকে পাঠিয়ে তুই অনুর কাছে যা।

তনু গিয়ে মাকে পাঠিয়ে দিলো।

মা- কিরে ডাকছিস কিছু বলবি???

রেনু- এখানে আসো বসো।

মা- কি হয়েছে???

বলেই মা বাবার দিকে তাকালো।

রেনু- বলছি কি। আমার তমার সাথে কথা হয়েছে। আমি ২/৩ দিনের জন্য ওর কাছে যেতে চাই। যদি তোমরা অনুমতি দাও তো।

বাবা- তমার কাছে যাবি ভালো কথা যা। এটা বলতে এতো সংকোচ কেন??

রেনু- না মানে এসময় যাওয়াটা ঠিক হবে কি না তাই ভাবছিলাম আর কি।

বাবা- আমাদের জন্য তো কম করিস না একটু নিজের কথাও ভাবতে হয় মা। যা তমার কাছে কয়টা দিন বেরিয়ে আয় তোর ভালো লাগবে। তোর উপর দিয়ে তো কম ধকল যায় নি। একটু বিশ্রাম আর রিফ্রেসম্যান্ট দরকার তোর। যা ঘুরে আয়।

বাবার অনুমতি পেয়ে আমি মার দিকে তাকালাম। কারণ আমার দুজনেরই অনুমতি প্রয়োজন।

রেনু- মা

মা- তোর বাবা কোন কিছুর অনুমতি দিলে আমি কি কখনো সেটাতে না করেছি?? তবে আমি ভাবছিলাম কি

রেনু- কি মা??

মা- নতুন চাকরী কোন সমস্যা হবে না তো???

রেন- না মা সমস্যা হবে না। প্রয়োজনে যে কয়দিন থাকবো সে কয়দিন অফ ডে তে কাজ করে পুষিয়ে দিবো তাহলেই হবে।

মা- তাহলে তো হয়েই গেলো। যা মা ঘুরে আয়। কবে যাবি???

রেনু- রাতের গাড়িতে যেতে পারলে ভালো হতো কিন্তু অফিসেও তো লিভ এপ্লিকেশন দেয়া লাগবে তাই কাল সকালেই রওনা দিবো ভাবছি। তবে আমি একেবারেই বের হবো সকালে আর আসবো না। অফিস থেকেই রওনা দিবো।

মা- বেশি ক্লান্তি হয়ে যাবে না???

রেনু- সমস্যা নেই মা বাসায় এসে গেলে আবার দেরি হয়ে যাবে।

মা- আচ্ছা যা ভালো মনে করিস।

আমি ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও ৪/৫ সেট ড্রেস আর কিছু যাবতীয় জিনিস নিয়ে নিলাম নাহলে আবার মা সন্দেহ করবে। আমি বাবা মাকে বলে বিদায় নিয়ে নিলাম। বের হওয়ার আগে বাবা আমার কপালে চুমু একে দিলেন। তমাকেও আমি সব জানিয়েছি৷ বাবা মা কেউই তমাকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করবে না জানি। আমার পন্থাটা হয়ত ভুল হতে পারে তবে আমি জানি আমি খারাপ কিছু করছি না। টুনিকে ওর মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি।

গলির মোড়ে আসতেই দেখি কালো গাড়িটা দাড়িয়ে আছে। যে আমাকে প্রতিদিন দিয়ে যায় নিয়ে যায় তার নাম রতন। তেমন কোন কথা হয় নি এই কয়দিনে রতন ভাইয়ের সাথে আমার।

রতন- ম্যাডাম কাল কখন যাবেন??? বলে দিলে আমি সেই হিসেবে সব ব্যবস্থা করে নিতাম।

রেনু- আপনাকে কে বলল???

রতন- স্যার ফোন দিয়ে ছিলো।

রেনু- রতন ভাই

রতন- জ্বি ম্যাডাম

রেনু- আমরা কি আজ রাতে যেতে পারি না???

রতন- রাতে যাওয়া যায় তবে টিকিট কাটা হয় নি যে। আর এখন পাবো কি না তাও ঠিন নেই।

রেনু- একটু চেষ্টা করে দেখবেন???

রতন- ঠিক আছে ম্যাডাম আমি আপনাকে বাসায় পৌছে দিয়ে দেখছি কিছু করা যায় কি না।

আমাকে দেখেই টুনি আমার কাছে ছুটে এলো। আমি হাসি মুখে বললাম।

রেনু- তৈরি হয়ে নাও টুনি আমরা তোমার মায়ের কাছে যাবো।

টুনি কিছু বলল না। তবে আমি টুনির চোখে স্পষ্ট হাসি দেখতে পারলাম। মানুষ যখন মন থেকে খুশি হয় তখন তার চোখ গুলো হাসে ঠিক যেমন এখন টুনির চোখ গুলো হাসছে।

হয়ত আমি সত্যি ভালো কিছু করছি তাই তো টিকিটের ব্যবস্থাও হয়ে গেলো। আমি, টুনি আর রতন ভাই কে সাথে নিয়ে রওনা দিলাম রহমত গঞ্জের উদ্দেশ্যে। টুনির গ্রামের নাম রহমত গঞ্জ।

৮ বছর পর আবার সেই পথে লঞ্চ চলতে শুরু করেছে তবে আজ পথের দিক ভিন্ন। আজ কোনো মেয়ে তার মায়ের থেকে আলাদা হবে না। আজ হারিয়ে যাওয়া মেয়ে তার মায়ের বুকে ফিরে যাবে। তাই আজ এই নিশ্চুপ রাতে লঞ্চের হুইসেল টাও শুনতে ভালো লাগছে। আমি পাতলা একটা শাল গায়ে দিয়ে কেবিনের বাহিরের বারান্দায় দাড়িয়ে রাতের নদী দেখছি। নদীটা শান্ত। একদম শান্ত। পানির এক ফোঁটা শব্দও নেই। পানির সাথে তাল দিয়ে প্রকৃতিও শান্ত হয়ে আছে। যেনো একে অপরের সাথে অভিমান করে চুপ করে আছে কথা বলছে না। তবে তাদের মান ভাংগাতে বাতাস হই হই করে কথা বলছে। বাতাসের প্রতিটা স্পর্শ আমাকে ছুয়ে যাচ্ছে। আমার দৃষ্টি অনেক দূর পর্যন্ত চলে যাচ্ছে সেই দিঘন্তের দিকে।

ভোর হতেই লঞ্চ ঘাটে ভিড়ে। টুনি ঘুমাচ্ছে। ঘুমন্ত টুনিকে দেখতে একদম বাচ্চা বাচ্চা লাগছে। কেউ বলতেই পারবে না এই ছোট্ট মেয়েটা এতো গুলো বছর নিজের জীবনটাকে একাই গুছিয়ে রেখেছে।

আমি টুনির পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। ঘুমের মাঝেই টুনির মুখে একটা আলতো হাসি ফুটে উঠল৷ টুনি ঘুমের মাঝেই বলে উঠলো ” মা “। আমিও ঠোঁটের কোণেও হেসে ফুটে উঠল। টুনির মুখে মা ডাকটা শুনতে খুব ভালো লাগছে। টুনিকে ডাক দিলাম।

রেনু- টুনি মায়ের কাছে যাবে না???

মায়ের কথা শুনে টুনি ধরপরিয়ে উঠল।

টুনি- মা মা কোথায়???

রেনু- লঞ্চ ঘাটে ভিরে গেছে।

টুনি- মায়ের কাছে চলে এসেছি??

রেনু- আর একটু পথ বাকি।

আমরা লঞ্চ থেকে নামলা। নামতেই টুনি থমকে গেলো।

রেনু- কি হলো???

টুনি আমাকে দেখিয়ে বলল।

টুনি- এখান থেকেই আমি আমার মায়ের থেকে দূরে চলে গিয়ে ছিলাম ৮ বছর আগে। আজ আবার সেখানেই দাড়িয়ে আছি।

রেনু- আজ আবার মায়ের কাছে ফিরে যাবে।

রতম ভাই একটা ভ্যান ভাড়া করলেন ঘাট থেকে টুনিদের গ্রাম রহমত গঞ্জ প্রায় ঘন্টা দুইয়ের পথ। গ্রামের আঁকা বাকা পথ দিয়ে আমরা যাচ্ছি। গ্রামের কাদামাটির একটা মিষ্টি গন্ধ এসে আমার নাকে লাগছে। নানারকম পাখির ডাক শুনতে পারছি।

ভ্যানে উঠার পর থেকেই টুনি আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আছে। আমি বুঝতে পারছি টুনির কেমন অনুভূতি হচ্ছে তাই পরম যত্নে আমি ওর হাতের উপর আমার আরেকটা হাত দিয়ে ধরে রাখলাম। সমস্ত পথ ও আমার হাত ছাড়ে নি। টুনির চোখে মুখে উদ্দীপনা।

ভ্যান টা একটা মোড়ে এসে বামে যেতে নিলেই টুনি চেচিয়ে উঠে।

টুনি- ডানে যান ভাই।

আমি বুঝতে পারলাম আমরা গন্তব্যের কাছাকাছি চলে এসেছি।

এই মেঠো পথটার শেষ মাথায় এসে ভ্যানটা থামলো। সামনে একটা বাড়ি। টুনি ফ্যাল ফ্যাল করে বাড়িটার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার বুঝতে বাকি রইল না আমরা টুনির মায়ের কাছে চলে এসেছি।

ভ্যান থেকে নামতেই টুনির যেনো আর পা চলছে না। টুনি সেখানেই দাড়িয়ে আছে। সামনে যাচ্ছে না হয়ত যেতে পারছে না। আমি টুনির কাঁধে হাত রাখতেই টুনি আমার দিকে তাকায়।

রেনু- যাও টুনি মা অপেক্ষা করছে যে।

আমার কথা শুনে টুনি এক মুহূর্তও অপেক্ষা করল না।

টুনি- মাআআ গো আমি আইছি মাআআ…. তুমি কই মাআআআ মাআআআআ

মা বলে চিৎকার করে মাকে ডাকতে ডাকতেই টুনি বাড়ির ভিতরে দৌড়ে গেলো। মা মেয়ের পুর্ণ মিলনের দৃশ্য দেখার লোভ সামলাতে না পেরে আমিও টুনির পিছনে দৌড়ে গেলাম।

টুনি- মা গো আমি আইছি মাআআআ….. মাআআআআ……

.

চলবে……..

Related Posts

Leave a Comment

Direct link ads